রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে

রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে,আগামী বছরে ২০২৫ সালে  পবিত্র মাহে  রমজান মাস ফেব্রুয়ারী তে শুরু হতে পারে ,এই তারখ ঘোষণা করেছেন আরব আমিরাত।তবে ফেব্রুয়ারী ২৮ তারিখে দেখা যেতে পারে মাহে রমজানের চাঁদ ।অনেক সময় আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়।

রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে

ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুসারে ।কিন্তু এগুলো পরিবর্তন করতে পারে চাঁদ দেখার কমিটির উপর নির্ভর করে।তবে মোটামুটি ভাবে মানুষকে জানানোর চেস্টা করা হয়েছে।তবে একান্তই চাঁদ দেখার উপর তারিখ গুলো পরিবর্তন হতে পারে ।মাস বাকি থাকতেই পবিত্র রমজানের তারিখ জানানো সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামি বছর পহেলা মার্চ শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান।

সূচীপত্র ঃ রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে

রমজানের ইতিহাস ও বিভিন্ন নবীদের রোজা

ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি জিনিসের উপর তন্মধ্যে একটি রোমজানের সিয়াম।আরবী সিয়াম শব্দের যথার্থ ভাব  প্রকাশক শব্দ বাংলা নেই  ।যদি কেউ  কৃচ্ছসাধনায় ও উপবাস  প্রভৃতি শব্দ দ্বারা সিয়ামের ভাব প্রকাশ করে।সিয়ামের প্রতি শব্দ হিসাবে ফারসী ভাষাকে রোজা শব্দটি ব্যবহৃত হয়,যদিও তা  সিয়মেড় শোঠীক ভাব প্রকাশক শব্দ নয়।

রোজা শব্দ দ্বারা সিয়ামকেই বোঝে ।কিন্তু সিয়াম বললে বেশির ভাগ লোকেই বুঝতে পারেন না যে, আরবী একটি পরিভাষা তাই আমি সিয়ামের বদলে রোজা শব্দটির ও বাধ্য হয়ে ব্যবহার করছি।
আরবী সিয়াম শব্দের শাব্দিক অর্থ বিরত  হওয়া এবং শ্রিয়তের পরিভাষায় সিয়াম হলো কতিপয় বিশেষ শর্তসাপেক্ষে বিশেষ বিষয় হতে নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ ভাবে বিরত থাকা।{ফাত হুল বারী ৪র্থ খন্ড,পৃ্স্টা (১০২-১০৩!)

এ রোজা কবে থেকে চালু হয়েছিলতার বিশদ বিবরন পাওয়া খুবই মুশকিল।এ সম্পর্কে কুর আনে আল্লাহু  সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,হে, ইমানদার গন ।তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হলো যেমন তোমাদের পূর্বেকার লোকদের উপর ফরয করা হয়েছিল।{সুরা বাকারাঃআয়াত -১৮৩}এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে,মুহাম্মদ সাঃ এর পূর্ববর্তী উম্মতগনের উপর রোজা ফরজ ছিল।
রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে
আদম (আঃ) এর রোজা কোন কোন সুফী বলেছে যে,আদম (আ:) যপ ন নিসিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন এবং তারপর  তাওবা করেছিলেন তখন ৩০ দিন  পর্যন্ত তার তাওবা কবুল  হয়নি যতক্ষন তার দেহে  ঐ ফলের কিছু অংশ ছিল।তারপর তার দেহ যখন তা থেকে পাক পবিত্র হয়ে যায় রখন তার তাওবা কবুল হয়।

নুহ (আঃ)রোজা আদম (আঃ) দ্বিতীয় আদম বলা হয়।এ যুগেও সিয়াম ছিল ।কারন,নবী করীম বলেন নুহ (আ)ইয়াওমুল ফিতর ইয়াওমুল আযহা ছাড়া গোটা বছর রোজা রাখতেন ।(ইবনে মাজাহ ১২৪  পৃস্টা )

ইব্রাহীম (আ) ও বিভিন্ন জাতির রোজা ঃ

নূহ (আ) এর পর নবী ছিলে ইব্রাহীম (আ) ।তার যুগে ক টা রোজা ছিল তার কোন বর্ণনা আমি পাইনি । ইব্রাহিম (আ) এর যুগে ৩০ টি সিয়াম ছিল বলে কেউ কেউ লিখেছেন,কিন্তু তারা কোন প্রমান দেন নি ।সে জন্য আমরা ঐসব লেখকদের উপরে আস্থা রাখতে পারেনি ।ইব্রাহীম (আ) এর কিছু পরের যুগ বৈদিক যুগ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে ,বেদের অনুসারী ভারতের হিন্দুদের মধ্যেও ব্রত অর্থাৎ উপবাস ছিল ।

প্রত্যেক হিন্দী মাসের ১১ তারিখে ব্রাহ্মণদের উপর একাদশীর উপবাস রয়েছে ।এ হিসেবে তাদের উপবাস ২৪ টি হয় ।কোন কোন ব্রাহ্মণ  কার্ত্তিক মাসে প্রত্যেক সোমবারে উপইবাস করেন । কখনো কখনো হিন্দু যোগিরা ৪০ দিন পানাহার ছেড়ে চল্লিশে ব্রত পালন করেন ।হিন্দুদের মত  জৈনরাও উপবাস রাখেন।

দাউদ (আ) এর রোজা ঃ

মুসা (আ) এর আসমানী কিতাব ধারী বিখ্যাত নবী ছিলেন দাউদ (আ)।ট্যাঁর যুগেও রোজার প্রচলন ছিল ।আল্লাহর রাসুল  (সাঃ) বলেনঃআল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতায়ালার নিকট সবচেয়ে প্রিয় রোজা দাউদ (আঃ) এর রোজা ।তিনি (আঃ) একদিন বিনা  রোজায়  থাকতেন।(নাসারী ১ম খন্ড ২৫০ পৃ্সটা ,বুখারী ,মুসলিম,মিশকাত ১৭৯ পৃষটা অর্থাৎ দাউদ (আ) অর্ধেক বছর রোজা রাখতেন এবং অর্ধেক বছর বিনা রজায় থাকতেন।

ইসা (আ) রোজা ঃ

দাউদ (আ) পর আসমানী কিতাব ধারি বিশিস্ট্য নবী হলেন ইসা (আ) ।তার যুগে এবং তার জন্মের আগেও রোজাআর প্রমান পাওয়া যায় ।কুর আনে আছে ,ইসা (আ)এর যখন জন্ম হয় তখন জনগন তার মা মারিয়ামকে তার জন্ম  সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমি করুনাময়ের উদ্দেশ্যে মানতের  রোজা রেখেছি আজকে আমি মানুষের সাথে মোটেও কথা বলবনা ।ইসা (আ) জঙ্গলে ৪০ দিন রোজা রেখেছিলেন ।

রমজানের ১০ শিক্ষা নিয়ে আলোচনাঃ

শিক্ষা ঃ ১ হুমাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন তমাদের কেউ যেন একদিন বা দু দিনের সাওমের মাধ্যমে রমজান কে এগিয়ে না আনে ,তবে কার যদি পূর্বের অভ্যাস থাকে, তাহলে সে ঐ দিন সাওম রাখবে ।(বুখারী হাঃ নং ১৮১৫,মুসলিম হাঃ নং ১০৮২) তিরমিযী হাদিসটি এভাবে এসেছে ।

তোমরা একদিন দু দিনের মাধ্যমে (রমজান) মাস এগোবে না তবে সেদিন যদি সাওমের দিন হয়, যা তোমাদের কেউ পালন করতরমজানের সতর্কতার জন্য তার পূর্বে সাওমের নিশেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ।ওলামায়ে কেরাম বলেছেন ঃহাদীসের অর্থও তোমরা সাওমের মাধ্যমে কেরাম রমজানের সতর্কতার  নিয়তে  রমজানকে এগিয়ে আনবে না (ফাথুল বারি-৪/১২৮)ইমাম তিরমিযী (র) বলেন ''আহলে ইলমের আমল এ হাদাইস মোতাবেক ।

তারা রমজান মাস আসার আগে রমজান হিসাবে সওম পালন করা পছন্দ করতেন না।হ্যাঁ কেউ যদি পূর্ব থেকে নির্দিষ্ট দিন সাওম পালন করে, আর সেদিন রমজানের আগের দিন হয়,তবে এতে তাদের নিকট কনো সমস্যা নাই।''।(সুনামে তিরমিযী-৬৮৪)রমজানের পূর্বে (রমজানের সাথে লাগিয়ে ) নফল সওম রাখা নিষেধ ।এদিন যার সওমেরদিন,সে এ থেকে ব্যতিক্রম যেমন কাফফারা বা মানতের সওম এবং যার এদিন নফল সওমের অভ্যাস রয়েছে,যেমন সোমবার ও বৃ্হস্পতিবার।

শিক্ষা ২ঃয়াব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (র) থেকে বর্ণিত ,রাসুলুল্লাহ (সা) একদা রহমান প্রসঙ্গে বলেন,তোমরা  সওম   ছারবেনা যতক্ষন হেলাল(নতুন চাঁদ) দেখ,আর যদি তোমাদের থেকে তা অদৃশ্য হয় ,তাহলে মাস পূর্ণ কর ।

শিক্ষা ৩ঃ ইবনে ওমর (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন ইস্লামের ভিত্তি প্যাঁচ টি বস্তুর উপর রাখা হয়েছে,এ কথা সস্বীকার করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল,সালাত কায়েম করা,যাকাত প্রদান করা,হজ সম্পাদন করাও রমজানের সওম পালন করা।

শিক্ষা ৪ ঃ আবু হুমায়রা(রা) থেকে  বর্ণিত রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন যখন রমজান মাস আগমন করে,তখন আসমানের দরজা সমুহ খোলা হয়,জাহান্নামের দরজা সমুহ বন্ধ করা হয় রবং শয়তান গুলো  শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।

শিক্ষা ৫ঃ হাফসা বিনতে  ওমর (রা) থেকে বর্ণিত ,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে ফপ্রজের পূর্বে সও্মের নিয়ত করল না,তার সওম নেই।ইমাম নাসারী এইভাবে বর্ণনা করেছেন।

শিক্ষা  ৬ঃ আবু হুমায়রা (রা) থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,সিয়াম ঢাল স্বরুপ, সুতরাং তোমাদের কেউ সিয়াম অবস্থায় হলে সে যেন অশ্লীলতা ও মূর্খতা পরিহার করে, যদি কেউ তাকে গালি দেয়,সে যেন বলে আমি রোজাদার।

শিক্ষা ৭ ঃ এক সাথে সিয়াম রাখা ও ভঙ্গ্ করা আবু হুমায়রা (রা) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন সেদিন সওম তোমরা যেদিন সওম পালন করবে,সেদিন ইফতার, তোমরা যেদিন ইফতার করবে,সেদিন কুরবানি,তোমরা যেদিন কুরবানি করবে।তিরমিযী,তিনি বলেছেন ঃ হাদিসটি হাসান,গরিব।

শিক্ষা ৮ঃ রোজাদারের গোসল ও শীতলতা অর্জন  করা ,আয়েশা (রা) থেকে  বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যুষ করতেন নাপাক অবস্থায়,অতঃপর গোসল করে মসজিদে যেতেন,তখনো তার মাথা থেকে পানি উপকাত, অতঃপর সেদিনের সওম পালন করতেন।(আহম্মদ;৬/৯৯নাসায়ি ফিল কুব্রা ;২৯৮৬,আবূ ঈয়ালা;৪৭০৮,বাযযার১৫৫২,তায়ালিসি;১৫০৩,তার সনদ সহীহ,হাদিসটি বুখারী ও মুসলিমে আছে অন্য শব্দে।

শিক্ষা ৯ঃ সিয়াম ফরজের ধাপ সমুহ বারা (রা)থেকে  বর্ণিত তিনি বলেনঃ নবী করিম (সাঃ) এর সাহাবীদের অভ্যাস ছিল,তাদের সিয়াম শেষে যখন খাবার উপস্থিত হতো ,আর তারা খানা না খেয়ে যদি ঘুমিয়ে যেতেন,তাহলে সে রাত ও পরবর্তী দিনে খেতেন না ।কাইস ইবনে সিরমা আল-আনসারী (রা) সওম শেষে খাবার সময় স্ত্রীর কাছে  বললেন ; তোমার নিকট খাবার আছে ? 

উত্তরে স্ত্রী বলল ; নেই, তবে আমি তোমার জন্য ব্যবস্থা করছি।সে ছিল দিনের কর্মকাণ্ড,তার দু 'চোখে ঘুম এসে গেল।তার স্ত্রী এসে তাকে দেখে বলল ঃ আফসোস আপনি বঞ্চিত হলেন । পরদিন যখন দুপুর হলো,তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন ।নবী করীম( সাঃ)কে বিষয়টি অবগত করানো হলো। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা নাযিল করলেন।সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাআদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে।(সুরা বাক্বারাঃআয়াত ১৮৭ )

শিক্ষা ১০ ঃ সিয়াম পাপ মোচন কারী ,আল্লাহ তায়ালা বলেন ঃ তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান -সন্ততি কেবল পরিক্ষা বিশেষ ।আর আল্লাহর নিকটেই মহান প্রতিদান ।(সুরা তাগাবুন;আয়াত-১৫) আর ভালো মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরিক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।(সুরা আম্বিয়া; আয়াত-৩৫) 

রমজানের পর করনীয় ও বর্জনীয় 

রমযান অতিক্লান্ত হলে আমরা বিদায় জানাচ্ছি মাহে রমজানকে ।এই তো বিদায় দিচ্ছি কুরআন তিলাওয়াত,তাক ওয়ার অনুশীলন  ধৈয্য ,জিহাদ ,রহমত ,মাগফিরাত ও মুক্তি লাভের মুবারক ম্যাসটিকে। তাহলে কি আমরা প্রকৃত তাকাওয়া অর্জন করতে পেরেছি? আমরা কি সর্বপ্রকার জিহাদেরকে অভ্যস্ত করতে পেরেছি ?রমজানের শিক্ষা রোজা সাধনার মাধ্যমে বান্দা রহমত,মাআগফিরাত ও মুক্তির সুসংবাদের আনন্দ লাভ করে  ইদুল ফিতরের দিন তার তার আংশিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে ।

আল্লাহ এর মাধ্যমে বান্দার আনন্দের সামান্য নমুনা দেখান ।মুমিনের আসল আনন্দতো হবে বেহেশতে আল্লাহর সাথে ।সত্যিকারের আনন্দ বা খুশিয়াসে আল্লাহর আনুগত্য বা আদেশ নিষেধ মানার মাধ্যমে ।তাই রোমজানের পরে আল্লাহর অন্যান্য আদেশ নিষেধ মেনে চললে সেই আনন্দ পূর্ণতা লাভ করবে।ইদে নতুন কাপড় -চোপড় ও সাজ সজ্জার প্রচলন আছে ।

ইদ সেই ব্যক্তির জন্য যে নতুন পোশাক পরে,ঈদ সেই ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহর আযাবকে ভয় করে ,ঈদ সে ব্যক্তির জন্য নয় যে যে সওয়ারীতে আরোহন করে ।বরং ঈদ সে ব্যক্তির জন্য যে গুনাহার কাজ ত্যাগ করে।এক নেক ও বুজুর্গ ব্যক্তি ঈদের দিন কিছু লোককে খেলাধুলায় মশগুল দেখে বললেন ;তোমরা যদি নেক কাজ করে থাক তাহলে তা নেক কাজের শুকুরিয়া নয়,আর যদি পাপ কাজ করে থাক তাহলে দয়াবান আল্লাহর সাথে এভাবে আর কত করবে? 


বিভিন্ন মাসের নফল রোজার গুরুত্ব

রমজানের একটি মাস বাধ্যতামুলক রোজা শেষ করার পর বছরের বাকি এগারটি মাসেও যাতে সিয়ামের অভ্যাস কিছু কিছু থাকে তার জন্য ঈদের পরদিন থেকেই পরের মাসেও যাতে কিছু কিছু সিয়াম রাখার বিধান রয়েছে।তবে ঐ সিয়াম গুলো রমজান মাসের মতো বাধ্যতামুলক নয় বরংইচ্ছাধীন। কেউ ইচ্ছে করলে তা রাখতে পারে।এবং বাড়তি সওয়াব  পেতে পারে।কিছি না রাখলে কেউ গুনাহগার হবে না ।

তবে সেই বাড়তি সওয়াব পাবে না আরবী নফল শব্দের শাব্দিক অর্থ বাড়তি ।তাই ঐ সিয়ামকে নফল সিয়াম বলা হয়।এ জন্য নবী (সাঃ) প্রত্যেক মাসে তিনটি করে (নফল )সিয়াম রাখতেন।অন্য এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন কোন এক ব্যক্তি যদি একদিন নফল রোজা রাখে তারপর তাকে যদি জমীন ভর্তি সোনা দেওয়া হয় তাহলেও সওয়াব হিসাবের দিনের তুলোনায় পুরোপুরী হবে না ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন ,যে ব্যক্তি রমজানের সিয়াম রাখল ,তাএপর এর পরেই শাওয়াল মাসে ছয়টি সিয়াম অ পালন করল সে ভালো সারাব বছরের সিয়ামের মতো করল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক তিনটি সিয়াম রাখল সে যেন গোটা বছরেই সিয়াম রাখল।হাফসাহ (রা) বলেন ,চারটি জিনিশকে নবী কখনোই ছাড়তেননা ।আশুরার রোজা ,যুলহিজ্জার দশটি সিয়াম  এবং প্রতি মাসে তিনটি সিয়াম ও ফজরের আগে দু'রাকাত সুন্নাত সালাত।


রমজান বিষয়ে দুর্বল হাদিস সমুহ

রমজান নিকটবর্তী হলে আমরা অনেকে নিম্নের পাঠ করি তবে এমন লোক খুব কম আছি যারা এর শুদ্ধতা ও অসুদ্ধতা সম্পর্কে জানি ।হে আল্লাহ আপনি রজব ও সাবান মাসেয়ামাদের জন্য বরকত রাখুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত উপনীত হওয়ার তাওফিক দান দিন।

ইমান আহমদ তার ''মুস্নাদ'' গ্রন্থে বলেন,আমাদেরকে বলেছেন আব্দুল্লাহ,তিনি বলেন আমাদেরকে বলেছে উবাইদুললাহ ইবনে  ওমর,যায়েদা ইবনে আবির রাকাদ থেকে,তিনি যিয়াদ আন্নুমাইরি থেকে,তিনি সাহাবি আনাস ইবনে মালেক থেকে,তিনি রজব মাস আস্লেরাসুল (সাঃ) বলতেন,ইবনুস সুন্নি ফিল আমালিল ইয়াওম ওয়াল লাইলাহ তিনি এ হাদিস ইবনে মুনি সূত্রে বর্ণনা করেন ,তিনি বলেন 

আমাদেরকে বলেছে আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে মুয়াম্মাল,তিনি বলেন আমাদেরকে বলেছে মুহাম্মদ ইবনে শারানি।যে ব্যক্তি  কনো কারন ব্যতীত রমজানের একদিন রোজা ভঙ্গ করল অথবা অসুস্থ্যতা ব্যতীত,পুর বছরের তার কাজা হবে না , যদি ও সে পুর বছর সওম পালন করে ।

আদম (আঃ) এর রোজা সম্পর্কে কিছু কথা 

বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম  কে রোজা রেখেছিলেন এ বিষয়ে সাধক শিরোমনি শায়েক আব্দুল  কাদির জিলানি (র) বর্ণনা করেছেন ,যির ইবনে হুবাইশ (রা) বলেন,একদা আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুউদ (রা) কে আইয়ামে বীয (চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বীয বলে)সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন,ল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আদম (র) কে একটি ফল খেতে নিশেধ করেছিলেন।

কিন্তু আদম (আ) সেই ফল খেয়ে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নেমে আস্তে বাধ্য হন।সেই সময় তস্র শরীরের রংকালো হয়ে যায়।ফলে এ তার দুর্দশা দেখে ফেরেশতাগন কেঁদে কেঁদে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা অরলেন,হে,আল্লাহ আদম তোমার প্রিয় সৃষ্টি , তুমি তাঁকে জান্নাতে স্থান দিয়েছিলে ,আমাদের দ্বারা তাকে সিজদাও করালে,আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আদম (আ) এর কাছে এ ওহী প্রেরন করলেন ।

তুমি চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,ও ১৫ তারিখে রোজা রাখ ।(আ) তাই করলেন । ফলে তার দেহের রং আবার উজ্জ্বল হলো।এ জন্য এই তিনটি  দিঙ্কে আইয়ামে বীয বা উজ্জ্বল দিন বলে আব্দুল কাদির জিলানি (র) উক্ত বিষয়টির প্রমানে কনো হাদিস বা তফসীরের উধৃতি দেন নি কাজেই বিষয়টা কতটা সত্য তা চিন্তা সাপেক্ষ ।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা ) বলেন,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঘরে ও সফরে আইয়াম বীযে কখনো সিয়াম না করে থাকতেন না ।

রমজানের পূর্বে সাওমের নিসেধাক্কা নিয়ে আলোচনা

আবু হুমায়রা (রা)থেকে বর্ণিত ,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন তোমাদের  কেউ যেন আকদিন বা'দু দিন সাওমের মাধ্যমে রমজান কে আগিয়ে না আনে , তবে কারাও যদি পূর্বের অভ্যাস থাকে ,তাহলে সে ঐ দিন সাওম রাখবে ,তোমরা একদিন দ'দিন এর মাধ্যমে (রমজান) মাস আগোবে না,তবে সেদিন যদি সাওমের দিন হয় ,যা তোমাদের কেউ লালন করত।

তোমরা সাওম রাখবে না যতখন না হেলাল (নুতন) চাঁদ দেখে সাওম পালন কর ,আর যখন তোমরা তা দেখে সাওম ভঙ্গ কর,আর যদি তোমাদের থেকে তা আড়াল হয় ,তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ কর।জমহুর ওলামায়ে কেরাম বলেন; যদি উনত্রিশ তারিখ চাঁদ দেখা না যায়,তাহলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।

যদি চাঁদ তোমাদের থেকে আড়াল হয়,তাহলে তার ত্রিশ দিন পূর্ণ কর।অপর বর্বণায় এসেছে ,ত্রিশ দিন গণনা কর।অপর বননয্য এসেছে ঃ সংখ্যা পূর্ণ কর ।এসব বর্ণনা মুসলিমে রয়েছে।আবু হুমায়রা (রা) বরনিত,তিনি বলেন ,রাসুলুল্লাহ(সাঃ)ইরশাদ করেন যখন তোমরা চাঁদ দেখ সাওম পালন কর,আবার যখন তোমরা চাঁদ দেখ সাওম ত্যাগ কর ।যদি তা তপমাদের থেকে তা আড়াল হয় ,ত্রিশ দিন সিয়াম পালন কর।

মাসের শুরু এবং শেষ নির্ধারন 

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত ,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) একদা রমজান প্রসঙ্গে বলেন,তোম্রা সাওম রাখবে না যতক্ষন না হেলাল(নুতন) চাঁদ দেখ আর সাওম ছাড়বে না যতক্ষন না তা দেখ আর যদি তোমাদের থেকে তা অদৃশ্য হয়,তাহলে মাস পূর্ণ কর ।আর যখন তোমরা তা দেখ ও সাওম ভঙ্গ কর,তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ কর।

ইস্লামী শরীয়তের সরলতার প্রমান যে ,সওম রাখা ওত্যাগ করা চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল করছে , যার জন্য সিক্ষার প্রয়োজন হই না,দৃস্টিসম্পন্ন প্রত্যেক ব্যক্টী টা ডেখটে পায়, পক্ষান্তরে যদি তা নক্ষত্রের ওপর নির্ভরশীল করা হতো ,তাহলে অনেক জায়গা মুসলিমের নিকট চাদের আকার ধারন করত,যেখানে গণক ও জ্যোতিষ্ক অনুপস্থিত ।

যে দেশে চাঁদ দেখা গেল ,তার অধিবাসীদের ওপর সওম ওয়াজিব।যে দেশে চাঁদ দেখা যায়নি ,তার ওধিবাসিদের ওপর সওম ওয়াজিব নয়,সওম সম্পর্কে চাঁদ দেখার  সাথে ,দ্বিতীয়ত চাদের কক্ষপথ বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্নযিনি দেশের প্রধান তিনি সওম ও চাদের ঘোষণা দিবেন যে চাঁদ দেখে তার দায়িত্ব দেশের প্রধান বা তার প্রতিনিধির নিকট সংবাদ পৌছে দেওয়া।

সওম ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ আলোচনা

সওম ইস্লামের পঞ্চম স্তম্ভইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত ,তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন ইস্লামের ভিত্তি পাঁচটি  বস্তুর ওপর রাখা হয়েছে , এ কথা  স্বীকার করা যে,আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদাল্লাহর রাসুল,সালাত কায়েম করা,হজ সম্পাদন ক্রা ও রমজানের সওম পালন করা।

আবু জামরাহ নসর ইবনে ইমরান (রা) বলেনঃ একদা আমি ইবনে আব্বাস (রা) ও শ্রোতাদের  মাঝে দোভাষীর কাজ করছিলাম ।তিনি বললেন ঃ আব্দুল কায়েস গোত্রেরপ্রতিনিধি গ্রউপ্রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর দরবারে উপস্থিত হন,তিনি তাদের বলেন,কোন গ্রুপ বা কোন সম্প্রদায়ের লোক ? তারা বলল ঃ আমরা রাবিয়াহ গোত্রের।তিনি বলেনঃ স্বাগতম প্রতিনিধিগ্রউপ বা স্বাগতম রাবিয়াহ সম্প্রদায় ,তিরস্কার ও  ভৎসনা মূক্ত ।

তারা বলেন ঃ আমরা আপনার নিকট আগমন করি অনেক দূর থেকে।আপনার ও আমাদের মাঝে রয়েছে মূদার  গোত্রের কাফেরদের এ গ্রাম,এ জন্য হারাম তথা সমানিত ও যুদ্ধ নিসিদ্ধ মাস ব্যতীতয়াপ্নার কাছে আমরা আস্তে পারি না।অতেব আমাদেরকে উপদেশ দিন ,যা আমরা আমাদের রেখে আসা ভাইদের নিকত পৌছাব এবং যার ওপর আমল করে আমরা সকলে জান্নাএ যাব।তিনি তাদের নিরদেশদিলেন চারটি বিষয়ের নির্দেশ দিলেন এক আল্লাহর ওপর ঈমানের ।তিনি বললেন ঃ তোমরা কি জান আল্লাহর ওপর ঈমান কি ? তারা বলল ঃ আল্লাহ  ও তার রাসুল ভালো জানেন।


রমজানের ফজিলত সম্পর্কে কিছু কথা

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে আবু হুমায়রা (রা) থেকে বর্ণীত ,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,যখন রমজান মাস আগোমন করে ,তখন আসমানের দরজাসমূহ খোলা হয় ,জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয়।যখন রজানের প্রথম রাত আসে ,শ্যতান ও অবাধ্য জ্বীন গুলো শৃঙ্খলিতও করা হয়,জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করা হয় না ।খোলা হয়না তার কোন দ্বার ,জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় ঃবন্ধ করানতার কোন তোরন  এবং একজন ঘোষক ঘোষণা করে,হে পুন্যের অন্বেষকারী অগ্রসর হও ।

হে মন্দের অন্বেষকারী,ক্ষান্ত হও।আর আল্লাহর জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রাপ্ত অনেক বান্দা এটা প্রত্যেক রাতে হয় ।তিনি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত  মোতাবেক  হাদীস্টি সহিহবপ্লেছেন।আলবানী সহীহ জামে তীরমিযীতে এ হাদিসটি সহীহ বলেছেন।তোমাদের  নিকট বরকত ময় মাস রমজান এসেছে ,আল্লাহ এর সওম ফরয করেছেন ।

রমজান মাস ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে

এতে জান্নাতের দ্বারসমূহ খোলা হয়,জাহান্নামের দরজা সমূহ বঙ্ঘ করা হয় ,শিকলে ব্যাধে রাখা সয়তানকে ।যে তার কল্যান থেকে বঞ্চিত হলো,সে প্রকৃত অর্থে বঞ্চিত হলো।প্রত্যেক রাতে ও দিনে আল্লাহর মুক্তি প্রাপ্ত বান্দা রয়েছে ,তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দোয়া কবুলের মহান প্রতিশ্রুতি।

পরিশেষে বলব যে এই লিখা  যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে ,তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন,আর এই পোস্টে বিস্তারিত লিখার জন্য চেস্টা করেছি তবে অনেক কিছু লিখেহি আবার অনেক কিছু বিস্তারিত লিখা হয়নি মূল কিছু লিখেছি । হয়ত ভালো লাগবে ।লাইক,কমেন্ট করবেন ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url